ঢাকা , সোমবার, ০৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ , ২০ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হলো ইজতেমার প্রথম পর্ব

মুসলিম জাতির হেদায়েত কামনা

স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় : ০২-০২-২০২৫ ১২:১২:২৩ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ০২-০২-২০২৫ ১২:১২:২৩ অপরাহ্ন
মুসলিম জাতির হেদায়েত কামনা সংবাদচিত্র: সংগৃহীত
গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ তীরে শেষ হয়েছে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের প্রথম ধাপ। রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টা ১১ মিনিটে আখেরি মোনাজাত শুরু হয়ে শেষ হয় ৯টা ৩৫ মিনিটে। এর মধ্য দিয়ে শেষ হয় তাবলিগ জামাত আয়োজিত ৫৮তম বিশ্ব ইজতেমা। আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন কাকরাইল মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা জুবায়ের।ইজতেমা ময়দানের বিদেশি নিবাসের পূর্বপাশে বিশেষভাবে স্থাপিত মোনাজাত মঞ্চ থেকে মোনাজাত পরিচালনা করা হয়। বিশেষ মোনাজাতে আনুমানিক ২০ লাখ মুসল্লি অংশ নিয়েছেন বলে ধারণা করছেন আয়োজকরা।

টঙ্গীর ইজতেমা মাঠসংলগ্ন ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গীর মিলগেট থেকে আবদুল্লাহপুর, রাজধানী ঢাকার কামারপাড়া-টঙ্গীর মন্নুগেট সড়ক এবং ঢাকা-আশুলিয়া সড়কের আবদুল্লাহপুর থেকে কামারপাড়া পর্যন্ত পুরো এলাকায় অসংখ্য মানুষ মোনাজাতে অংশ নেন। শনিবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় রবিবার ভোর থেকে মুসল্লিরা আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে হেঁটে ইজতেমা ময়দানে ছুটে এসেছেন।প্রথম পর্বের শুরায়ে নিজামের ইজতেমা আয়োজক কমিটির সমন্বয়কারী হাবিবুল্লাহ রায়হান জানান, বাদ ফজর ভারতের মাওলানা আব্দুর রহমান হেদায়েতি বয়ান করছেন। এখান থেকে যারা তিন চিল্লার জন্য জামাতে বের হবেন, তারা জামাতে গিয়ে কী আমল করবেন এবং এখান থেকে যারা মহল্লায় ফিরে যাচ্ছেন তারা নিজ এলাকায় গিয়ে কী আমল করবেন তার দিকনির্দেশনামূলক বয়ান করা হয়। তাৎক্ষণিক বাংলায় অনুবাদ করে মাওলানা আব্দুল মতিন বয়ান বুঝিয়ে দিয়েছেন। ভারতের মাওলানা ইব্রাহিম দেওলা নসিহতমূলক কথা বলেন। বাংলায় অনুবাদ করেন মাওলানা জুবায়ের।

তিন দিনের বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নেওয়া মুসল্লি ছাড়াও আখেরি মোনাজাতে শরিক হতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বহু মানুষ ইজতেমা ময়দানে এসেছেন। আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে আসা মুসল্লিরা জানান, পরিবহন বন্ধ থাকায় আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে শনিবার রাতেই ইজতেমা ময়দানে এসেছেন তারা। রাতে কামারপাড়া সড়কের ফুটপাতে অবস্থান নিয়েছেন। সেখানেই ফজরের নামাজ আদায় করে হেদায়াতি বয়ান শুনেছেন। ভোর থেকেই আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে কেউ পায়ে হেঁটে, কেউ বাস ও পিকআপে করে ইজতেমা ময়দানে এসেছেন।ইজতেমা ময়দানে এসেছেন নারীরাও। উড়াল সেতুর নিচে মহাসড়কের পাশে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে অবস্থান নিয়েছেন তারা। সেখান থেকেই আখেরি মোনাজাতে অংশ নেবেন।

এদিকে, বিশ্ব ইজতেমার আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে গণপরিবহন সংকটে পড়তে হয়েছে অফিসগামী যাত্রীদের। বিশেষত টঙ্গী থেকে উত্তরামুখী সড়কে গণপরিবহনের জন্য ভোগান্তি বেশি দেখা গেছে। গাজীপুর বা টঙ্গী থেকে যান চলাচল বন্ধ থাকায় তাদের এ ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। দু-একটি বাস এলেও ভিড়ের কারণে ওঠার উপায় ছিল না।তাবলিগের দুই পক্ষ মাওলানা জোবায়ের ও সা’দ কান্ধলভীর অনুসারীরা আলাদাভাবে দুই পর্বে ইজতেমা করছেন। এবার মাওলানা জোবায়েরের অনুসারীরা প্রথম পর্বে তাদের ইজতেমা দুই ধাপে করবেন। রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) আখেরি মোনাজাতে শেষ হয়েছে প্রথম ধাপ।ইজতেমার আয়োজকরা জানান, এবারের বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের প্রথম ধাপ ৩১ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হলো। ঢাকার একাংশ এবং ৪১ জেলার মুসল্লিরা প্রথম ধাপে অংশ নিয়েছেন। আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি প্রথম পর্বের দ্বিতীয় ধাপের ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে। দ্বিতীয় ধাপে ঢাকার বাকি অংশের মুসল্লিসহ ২২ জেলার মুসল্লিরা অংশ নেবেন।

আট দিন বিরতি দিয়ে ভারতের মাওলানা সা’দ অনুসারীরা ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে দ্বিতীয় পর্বের বিশ্ব ইজতেমার আয়োজন করবেন। ১৬ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে ২০২৫ সালের বিশ্ব ইজতেমা।গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি) কমিশনার ড. নাজমুল করিম খান জানান, আখেরি মোনাজাতের শেষে মুসল্লিদের বাড়ি ফেরা পর্যন্ত ইজতেমা ময়দানসহ আশপাশের এলাকায় প্রায় সাত হাজার পুলিশ নিয়োজিত থাকবে। খিত্তায় খিত্তায় মুসল্লিদের বেশে সাদা পোশাকে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। মুসল্লিরা যাতে দ্রুত এবং নিরাপদে ইজতেমা ময়দান ত্যাগ করতে পারে সেজন্য বাস, ট্রেনসহ সব ধরনের যানবাহনের ব্যবস্থা রয়েছে।

বাংলাস্কুপ/প্রতিবেদক/এনআইএন


প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স


এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ